শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:০৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
সর্বশেষ সংবাদঃ
শ্যামনগরে হাইকোর্টের নির্দেশনাকে অবজ্ঞা করে মানববন্ধন শ্যামনগর রাতের আঁধারে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন নূরনগরে দৃষ্টিপাত সম্পাদকের সহধর্মিনী আনোয়ারা বেগম স্মরণে কোরআন খতম ও দোয়া অনুষ্ঠিত শ্যামনগরের উপকূলীয় কালিন্চী গ্রামে চাঁদাবাজরা বেপরোয়া দৃষ্টিপাত সম্পাদকের সহধর্মিনী আনোয়ারা বেগম এর মৃত্যুতে শ্যামনগর দৃষ্টিপাত পরিবারের শোক উস্কানিমূলক কথার প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল কর্মী পিটিয়ে আহত করলেন দুই চিংড়িঘের কর্মচারীকে শ্যামনগরে র‍্যাবের অভিযানে ৪৭২৫ কেজি চিনি যুক্ত ভেজাল মধু উদ্ধার মামলা থেকে জামিন নিয়ে দুর্বৃত্তরা রাতের অন্ধকারে চিংড়ি ঘেরের বসতবাড়ী আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিলো শ্যামনগরে মৎস্য প্রকল্পের গেট ভাংচুরসহ লুটপাটের অভিযোগ দুর্বৃত্তরা পরিবারের সবাই কে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করতে চেয়েছিল সাতক্ষীরাতে প্রদীপ্ত প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থার আয়োজনে আলোচনা সভা এবং খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠান শ্যামনগরে খাসজমিতে ভূমিহীনদের অধিকার বিষয়ে সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে কর্মশালা সাংবাদিক সামিউল মনিরের আম্মার দাফন সম্পন্ন :পারিবারিক গোরস্থানে সমাহিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা স্মরণে শ্যামনগরে আলোচনা সভা ও প্রতিবাদ সমাবেশ সাতক্ষীরার শ্যামনগরে লায়ন্স ক্লাবের উদ্যোগে অসহায়দের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শ্যামনগরে তিন দিন ব্যাপী শিক্ষকদের জীবন দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ সমাপনী সাতক্ষীরাসহ দেশের ৬৩ জেলায় জঙ্গীবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধে শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের মানববন্ধন কাশিমাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সম্পাদক আনিসুজ্জামান বাবলু আর নেই ১৫ ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিতঃ জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ১৭ নীলডুমুর বিজিবি ব্যাটালিয়নের উদ্যোগে অসহায়-দুঃস্থদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
Notice :
বিজ্ঞপ্তি : জনপ্রিয় অনলাইন পত্রিকা সুন্দরবন নিউজ এর জন্য সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কিছু সংখ্যাক সংবাদকর্মী আবশ্যক। 01641-530024

আবারো ভাঙলো বাঁধ, ডুবলো সাতক্ষীরা উপকূল

শাহারুল আমিন। / ১৪৭ সময়ঃ
নিউজ আপঃ বৃহস্পতিবার, ২৭ মে, ২০২১, ৪:২৩ অপরাহ্ণ

জরাজীর্ণ জোড়াতালি দিয়ে চলা নদীর রক্ষাকারী বাঁধ ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব মোকাবেলা করতে পারল না। আবারো ভাঙলো বাঁধ, ডুবলো সাতক্ষীরার বিস্তীর্ণ উপকূল।
এর আগে আম্পান, ফনি, বুলবুল, আইলা, সিডরসহ বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাঁধ ভেঙে ডুবেছিল সাতক্ষীরার উপকূল। কিন্তু এবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াস সাতক্ষীরা উপকূলে ডানা ঝাপটায়নি। ভরা পূর্ণিমায় চোখ রাঙিয়েছে মাত্র। সেই চোখ রাঙানিতে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে সাতক্ষীরার সাত উপজেলার মধ্যে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে ও বাঁধ উপচে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে ওই সব গ্রাম।

এ ভয়াবহ অবস্থার জন্য ষাট দশকের সেই জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, দিন আসে, দিন যায়, বদলায় অনেক কিছু। শুধু বদলায় উপকূলের বেড়িবাঁধের চেহারা। প্রতিবছর দুর্যোগ আসে, কিন্তু বাঁধগুলো সংস্কার করা হয়না। ঠিক দুর্যোগ মুহূর্তে কিছু বালির বস্তা নিয়ে হাজির হয় কর্তৃপক্ষ।

এদিকে ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে বিপুল সংখ্যক কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিতে ভেসে গেছে ছয়টি উপজেলার হাজার হাজার চিংড়ি ঘের ও ফসলী ক্ষেত। নষ্ট হয়েছে সুপেয় পানির আঁধার পুকুরগুলো। পানির তোড়ে শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার প্রধান প্রধান সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে না উঠলেও গবাদি পশু ও হাঁস মুরগি নিয়ে বহু মানুষ বাড়ির নিকটবর্তী উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা।

বুধবার (২৬ মে) সকালে জোয়ারের চাপে শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের ঝাপা গ্রামে বেড়িবাঁধের চারটি পয়েন্ট, পাতাখালির দুটি পয়েন্ট, রমজাননগরের দুটি পয়েন্ট, গাবুরার তিনটি পয়েন্ট, কৈখালির দুটি পয়েন্ট, ভেটখালি জামে মসজিদের সামনে একটি পয়েন্ট, বুড়িগোয়ালিনীর তিনটি পয়েন্ট ও নূরনগর ইউনিয়নের একটি পয়েন্টসহ অন্তত: ১৭টি স্থানে পানি বেড়িবাঁধ উপচে গ্রামে ঢুকে পড়েছে। এসব বেড়িবাঁধ ভেঙে চুরমার হয়ে যাওয়ায় সয়লাব হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম।

এদিকে শ্যামনগরের গাবুরার জেলেখালি, নেবুবুনিয়া, চাঁদনীমুখা, গাগড়ামারি, পদ্মপুকুরের উত্তর ও দক্ষিণ পাতাখালি, কামালকাটি, ঝাঁপা ও সোনাখালিসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম উপচে পড়া নদীর জোয়ারের পানিতে ভাসছে। গ্রামবাসী ও জনপ্রতিনিধিরা বালির বস্তা এবং মাটি ফেলে বাঁধ সংস্কারের চেষ্টা চলছে।

গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিএম মাছুদুল আলম, পদ্মপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এড. আতাউর রহমান, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বাবু ভবতোষ মন্ডল, মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল কামেশ মোড়ল, কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিমসহ স্থানীয়রা এসব তথ্য জানান।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আ.ন. ম. আবুজর গিফারী বলেন,তাৎক্ষনিকভাবে সরকারী সাহায্য হিসেবে প্রতিটি ইউনিয়নে নগত ২৫ হাজার টাকা ও ২ মে. টন করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া শুকনা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।

এদিকে কালিগঞ্জের পূর্ব নারায়নপুর গ্রামের জব্বারের মাছের ঘের সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে উপজেলা হাসপাতাল, আব্দুস সামাদ স্মৃৃতি মাঠ, বাস টার্মিনাল সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম কাঁকশিয়ালী নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া কালীগঞ্জ সোহরাওয়ার্দি পার্কের পাশে কাঁকশিয়ালী নদীর পানি উপচে উপজেলা সদরের বেশ কিছু এলাকা তলিয়ে গেছে। উপজেলা পরিষদের কাছে যমুনা নদীর উপর নির্মিত সুইচ গেটের পাটাতন বন্ধ থাকায় সেখান থেকে পানি উপচে নাজিমগঞ্জ বাজার ও উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে একাকার হয়ে গেছে। উপজেলার ঘোজাডাঙা এলাকায় কাঁকশিয়ালী নদীর বাঁধ উপচে উত্তর শ্রীপুর ও দক্ষিণ শ্রীপুরসহ তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

ভাঙনের ফলে কপোতাক্ষের পানিতে আশাশুনি উপজেলার কুড়িকাহুনিয়া লঞ্চঘাট, হরিশখালি, চাকলা, রুইয়ার বিল, সুভদ্রকাটি, দিঘলারআইট সহ কয়েক পয়েন্টের বেড়িবাঁধ উপচে ও ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। এছাড়াও আশাশুনি সদরের দয়ারঘাট ও বলাবাড়িয়ায় বেড়িবাঁধ উপচে পানি বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের পিরোজপুরের রাজবংশীপাড়ায় কপোতাক্ষ নদের বাঁধ উপচে বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আশাশুনির দয়ারঘাট ও বলাবাড়িয়ায় খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ উপচে পানি এলাকায় ঢুকে কয়েক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বড়দল ইউনিয়নের বামনডাঙ্গা বেড়িবাঁধ উপচে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকছে।

এদিকে দেবহাটা উপজেলার ইছামতী নদীর কোমরপুর নামকস্থানে বেড়িবাঁধ উপচে বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হাড়দ্দহ মসজিদের পাশে ও তালা উপজেলার পাখিমারা বিলে টিআরএম এর বাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

এছাড়া বিভিন্ন স্থানে কালভার্ট ধ্বসে নদীর পানি ছড়িয়ে পড়েছে। শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের সেতু উপচে চুনা নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে এলাকা। এখন পর্যন্ত কোন প্রাণহানির কোন খবর পাওয়া যায়নি। তবে গ্রামবাসী গবাদিপশু ও তাদের সহায়-সম্পদ নিয়ে আতংকিত হয়ে পড়েছেন। সাতক্ষীরায় দিনভর বৃষ্টি হয়েছে সেইসাথে ঝড়ো হাওয়া ছিল প্রবল।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সাতক্ষীরার নদীগুলোতে পানি বেড়ে গাবুরা, বুড়িগোয়ালিনি, কৈখালী, পদ্মপুকুরসহ কয়েকটি ইউনিয়নের বেড়িবাধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া নদীর পানি বেড়ে বেড়ি ছাপিয়েও পানি প্রবেশ করেছে। কিছু মানুষ জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে। তাদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। এছাড়া রাতে আবারো জোয়ারে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতে পারে।

সে কারণে পানিবন্দি মানুষজনকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও চেয়ারম্যানগণ সক্রিয় রয়েছেন ভাটা নেমে যাওয়ার সাথে সাথে পানি বের করতে কাজ করবেন।

সাতক্ষীরা-৪ শ্যামনগর ও কালীগঞ্জ (আংশিক) এর সাংসদ এস,এম, জগলুল হায়দার বলেন, এক বছর আগে আঘাত হানা আম্পানের ক্ষত শুকানোর আগেই আবারও ইয়াসের ছোবল মানুষকে নতুন করে বিপদে ফেলেছে। সকলে মিলে একসাথে কাজ করে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।


এই বিভাগের আরও খবর

জেনে নিন এক ক্লিকে বিভাগের সবখবর