শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:০০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
সর্বশেষ সংবাদঃ
শ্যামনগরে হাইকোর্টের নির্দেশনাকে অবজ্ঞা করে মানববন্ধন শ্যামনগর রাতের আঁধারে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন নূরনগরে দৃষ্টিপাত সম্পাদকের সহধর্মিনী আনোয়ারা বেগম স্মরণে কোরআন খতম ও দোয়া অনুষ্ঠিত শ্যামনগরের উপকূলীয় কালিন্চী গ্রামে চাঁদাবাজরা বেপরোয়া দৃষ্টিপাত সম্পাদকের সহধর্মিনী আনোয়ারা বেগম এর মৃত্যুতে শ্যামনগর দৃষ্টিপাত পরিবারের শোক উস্কানিমূলক কথার প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল কর্মী পিটিয়ে আহত করলেন দুই চিংড়িঘের কর্মচারীকে শ্যামনগরে র‍্যাবের অভিযানে ৪৭২৫ কেজি চিনি যুক্ত ভেজাল মধু উদ্ধার মামলা থেকে জামিন নিয়ে দুর্বৃত্তরা রাতের অন্ধকারে চিংড়ি ঘেরের বসতবাড়ী আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিলো শ্যামনগরে মৎস্য প্রকল্পের গেট ভাংচুরসহ লুটপাটের অভিযোগ দুর্বৃত্তরা পরিবারের সবাই কে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করতে চেয়েছিল সাতক্ষীরাতে প্রদীপ্ত প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থার আয়োজনে আলোচনা সভা এবং খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠান শ্যামনগরে খাসজমিতে ভূমিহীনদের অধিকার বিষয়ে সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে কর্মশালা সাংবাদিক সামিউল মনিরের আম্মার দাফন সম্পন্ন :পারিবারিক গোরস্থানে সমাহিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা স্মরণে শ্যামনগরে আলোচনা সভা ও প্রতিবাদ সমাবেশ সাতক্ষীরার শ্যামনগরে লায়ন্স ক্লাবের উদ্যোগে অসহায়দের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শ্যামনগরে তিন দিন ব্যাপী শিক্ষকদের জীবন দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ সমাপনী সাতক্ষীরাসহ দেশের ৬৩ জেলায় জঙ্গীবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধে শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের মানববন্ধন কাশিমাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সম্পাদক আনিসুজ্জামান বাবলু আর নেই ১৫ ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিতঃ জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ১৭ নীলডুমুর বিজিবি ব্যাটালিয়নের উদ্যোগে অসহায়-দুঃস্থদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
Notice :
বিজ্ঞপ্তি : জনপ্রিয় অনলাইন পত্রিকা সুন্দরবন নিউজ এর জন্য সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কিছু সংখ্যাক সংবাদকর্মী আবশ্যক। 01641-530024

করোনাকালে খাদ্য সংকট মোকাবেলায় আমাদের করণীয়

প্রতিবেদকের নাম / ৯৭৫ সময়ঃ
নিউজ আপঃ মঙ্গলবার, ১৬ জুন, ২০২০, ৯:৩৯ অপরাহ্ণ

সার্স করোনাভাইরাস-২ বা নোবেল করোনা, যা কোভিড-১৯ নামেও পরিচিত। পুরো পৃথিবী জুড়ে মহামারী ভাইরাসটি এ শতাব্দীর এক আতংক ও প্রাণঘাতিতে অগ্রগামী। এটা এক ধরনের মরণঘাতী ভাইরাস। যার ফলে থমকে গেছে আমাদের বাংলাদেশ সহ পুরো পৃথিবী। অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিচ্ছে, যার ফলে সহজেই দেখা দিতে পারে খাদ্য সংকট সহ বিভিন্ন ধরনের সংকট। এই সংকটের মধ্যে খাদ্য ও স্বাস্থ্য সংকট মোকাবেলায় আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। নিম্নলিখিত পরামর্শ অনুসরণের মাধ্যমে খাদ্য সঙ্কট মোকাবেলা করা সহজ হবে বলে একজন কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে আমি মনে করছি।

* প্রতিটা জমির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দেশের মাটি এতটাই উর্বর যে এখানে বীজ দিলেই বেরিয়ে আসে শস্য। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী এবং দেশের কল্যাণে আমাদের প্রতিটি জমি, বাড়ির আঙিনা, রাস্তার দুই পাশে যেখানেই ফাঁকা জমি আছে তা কাজে লাগাতে হবে। বিশেষ করে শাকসবজি ফলমূল যা খুব দ্রুত ফলন দেয়া শুরু করে ও পুষ্টির চাহিদা মেটায়। দেহের ইমিউনিটিকে বৃদ্ধি করে এমন সব

* শহর এলাকায় যে সকল পতিত জমি রয়েছে তার সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বর্তমানে শহর এলাকায় খুবই জনপ্রিয় ছাদকৃষি যা আগে শখের হলেও বর্তমানে তার পরিসর অনেক বড়। ছাদ কৃষিতে টবে করে বিভিন্ন শাকসবজি যেমন পুই শাক,কলমি শাক, মরিচ, টমেটো, ক্যাপসিকাম, লাউ, কুমড়া, ডাটা শাক সহ অন্যান্য সবজি যা ঘরের বেলকনিতে ও সহজে চাষযোগ্য।

* কৃষকদের শস্য উৎপাদনের পাশাপাশি সবজি চাষের প্রতি গুরুত্ব দেয়া। করোনা মোকাবেলায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করা অতীব জরুরি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অন্যতম ভূমিকা রাখে শাকসবজি। শস্য উৎপাদনের পাশাপাশি অধিক সবজি উৎপাদনে ও গুরুত্ব দিতে হবে।

* সম্ভব হলে প্রতিটা বাড়িতে গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি সহ অন্যান্য গবাদি পশুপাখি পালন করা উচিত। আমাদের প্রোটিনের চাহিদা পূরণের জন্য অন্যতম ভূমিকা পালন করে এটি। প্রোটিনের অন্যতম চাহিদা পূরণ করে ডিম, দুধ, মাংস যা খুব সহজেই সংকটকালীন মুহূর্তে আমাদের চাহিদা পূরণ করতে পারে।

* সামনেই আসছে বর্ষার মৌসুম। এমন অবস্থায় নিচু অঞ্চল, যেখানে জমি পানিতে তলিয়ে যায়, এমন অবস্থায় বর্তমানে আধুনিক পদ্ধতিতে ভাসমান কৃষি এক অনন্য চাষাবাদ পদ্ধতি। স্বল্পমূল্যে ও সহজে ব্যবহারোপযোগী একটা চাষাবাদ মাধ্যম যা হাওর ও নিচু অঞ্চলের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। এছাড়া যে কোন বড় পুকুর বা খালে এর চাষাবাদ সম্ভব।

* জমি থেকে সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে ও যার অক্লান্ত পরিশ্রমে বেরিয়ে আসে সোনার ফলন সে হলো কৃষক। আমাদের মৌলিক চাহিদার প্রধান ‘অন্ন’ বা ‘খাদ্য’ যা পূরণে অগ্রণী ভূমিকা রাখে এই কৃষক। বাংলার অর্থনীতির চাকা সচল রাখার পক্ষে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে এই কৃষক। তাই এই দুঃসময়ে আমাদের সকলকে তাদের সর্বাত্মক পাশে থাকা উচিত। সরকার এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও তাদের চাষকৃত উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য যেন তারা সঠিকভাবে পায় সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, ‘কৃষক বাঁচলে বাঁচবে দেশ’।

* চারা রোপণ থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত সমস্ত কাজই এখন অত্যাধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে সম্ভব। কৃষি যন্ত্রপাতি প্রয়োগের মাধ্যমে চাষাবাদ করাই হল কৃষি যান্ত্রিকীকরণ। বীজ বপন, সার প্রয়োগ, কীটনাশক প্রয়োগ, সেচ দেয়া,আগাছা দমন সকল কিছুই যন্ত্রের মাধ্যমে আরো সহজ হয়েছে। এতে যেমন সময় ও কম লাগছে তেমনি খরচ ও কম হচ্ছে। এর পেছনে আমাদের কৃষিবিদদের অবদান অন্যতম। এই সংকটকালীন মুহূর্তে কৃষি যন্ত্রের ব্যবহার বাড়াতে হবে এবং কৃষককে এর জন্য পরামর্শ ও সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে হবে।

* দেশ ও দেশের কৃষকদের আশার আলো দেখাতে সদা চেষ্টা করে যাচ্ছে আমাদের কৃষিবিদ। যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও চেষ্টায় উদ্ভাবিত হয়েছে নতুন নতুন ফসলের জাত। ফলে একদিকে যেমন পূরণ করছে দেশের খাদ্য চাহিদা অন্যদিকে অবদান রাখছে দেশের অর্থনীতিতে। ফসলের উৎপাদন বেড়েছে বহুগুণ। বিভিন্ন হাইব্রিড জাত থেকে শুরু করে আগাম জাত বা স্বল্প সময় উৎপাদিত ফসলের জাত। শস্য থেকে শুরু করে সকল কৃষি পণ্যের উন্নয়নে রয়েছে তাদের অবদান। এ সকল হাইব্রিড জাত ও সল্প সময়ে উৎপাদিত ফসলের জাত ব্যবহার করেই আমাদের এই সংকট মোকাবেলা করতে হবে।

* একই জমিতে একাধিক ভিন্ন গোত্রের ফসল চাষ পদ্ধতিই হল মিশ্র চাষ। মিশ্রচাষ এক চমৎকার চাষ পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ ও ফসল উৎপাদনে বেশি ফলন, পোকার উপদ্রব কম। এই সংকটকালীন মুহূর্তে মিশ্র চাষাবাদ পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত এবং কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

* ফসল শুধু উৎপাদন করলেই হবে না। সঠিকভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ফসল সংরক্ষণ সংকটকালীন মুহূর্তে অতীব জরুরী বিষয়। এর জন্য পর্যাপ্ত হিমাগার ও সংরক্ষণাগার তৈরি করতে হবে এবং সংরক্ষণ করতে হবে। ফসলের বীজেরও সংরক্ষন করা জরুরি,শুধু ফসল নয় এর সাথে সবজির বীজ সংরক্ষণ করা একান্ত আবশ্যক।

* সর্বোপরি কথা, এই সংকটকালীন মুহূর্তে উৎপাদিত ফসল প্রতিটি ভোক্তার কাছে যেন সুষ্ঠুভাবে পৌঁছায়, তার জন্য সঠিকভাবে বিপণন এর ব্যবস্থা অতীব জরুরী। আর তার জন্য দরকার সিন্ডিকেট মুক্ত বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ। কৃষকের অতি কষ্টে অর্জিত ফসল যা সবসময় তার ন্যায্য মূল্য পর্যন্ত পায়না, আর সেই একই ফসল বাজার ঘুরে ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে পৌঁছাতে তার চড়া মূল্য হয়ে যায়। আর এই পুরো ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে সিন্ডিকেট। যেমন পাইকারি বাজারে ধানের দাম কমলেও খুচরা চালের বাজারে চড়া দাম। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে সরকার ও প্রশাসনকে সিন্ডিকেট মুক্ত বাজার ব্যবস্থার তদারকি করতে হবে। কৃষক থেকে ন্যায্য মূল্যে সরাসরি প্রশাসনের সহায়তায় বাজার আর বাজার থেকে ন্যায্যমূল্যে ভোক্তর হাতে পৌঁছাতে পারলে কিছুটা পরিত্রাণ সম্ভব। ফলে কৃষক বাঁচবে, দেশ বাঁচবে ও সংকট মোকাবেলা সহজ হবে।

লেখক: আব্দুল্লাহ – আল- ফাহিম
শিক্ষার্থী, কৃষি বিভাগ, শেষ বর্ষ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ।


এই বিভাগের আরও খবর

জেনে নিন এক ক্লিকে বিভাগের সবখবর